বৃহস্পতিবার, ১৯ জুলাই, ২০১৮

চেনা শুন্যতা


নিজের শহরের বাতাসের গন্ধটা অনেক পরিচিত।কিভাবে যেন নস্টালজিক করে ফেলে।
মনে করিয়ে দেয় এই শহরে কাটানো কোন এক সময়ের অসংখ্য অলস দুপুরের কথা কিংবা ইলেক্ট্রিসিটি চলে যাওয়া তীব্র গরমের অসংখ্য রাতের কথা।

হয়ত সময়গুলাকে তখন বিরক্তিকর মনে হতো কিন্তু এখন আসলে বুঝি সময়গুলো বিরক্তিকর ছিলো না।ব্যস্ত জীবনের মধ্যে যখন সময়গুলোকে মনে করি তখন মনে হয়,না তো খারাপ ছিলাম না।বরং এখনি খারাপ আছি।আসলে খারাপ বলাটা ঠিক হবে না।হয়ত সময়ের প্রয়োজন বলাটা ঠিক হবে।

যে টেবিলটাতে বসে সেই সময়ের কোন এক ক্লান্ত দুপুরে যখন একরাশ বিরক্তি নিয়ে ক্লাস টেনের ইংরেজি টেস্ট পেপারের মডেল কোশ্চেনগুলো সলভ করতাম আর মনে মনে স্যারকে একশ একটা গালি দিতাম ঠিক সেই টেবিল আর সেই চেয়ারটাতে বসে যখন এই স্ট্যাটাসটা লেখছি তখন সেই বিরক্তিকর সময়ের স্মৃতিগুলোই মনে সবচেয়ে বেশি নাড়া দিয়ে উঠছে।

এখন নিজের শহরে আসতে হয় অতিথি হয়ে।হুট করে অসময়ে যখন চলে আসি তখন মনে হয় বাসাটা খা খা করছে।ভাই বোনদের সাথে কাটানো ছোটবেলার প্রতিটা স্মৃতি বাসার প্রতিটা জিনিষ মনে করিয়ে দেয়।ইচ্ছা থাকলেও তখন আর সবাই একত্রিত হওয়া যায় না।শহরের প্রিয় মুখগুলোকে তখন ইচ্ছা হলেও আর শহরে পাওয়া সম্ভব হয় না।স্মৃতিতে সবচেয়ে বেশি নাড়া দেয় শহরের অনেক পরিচিত অলিগলি আর রাস্তাগুলো।নিজের অজান্তেই একটা শূন্যতা সৃষ্টি হয়।

আসলে এই অনুভুতিগুলো কোনোদিন বলে বোঝানো যাবে না।বললাম না বাতাসের গন্ধ পুরান স্মৃতি টেনে নিয়ে আসে।

পুর্ণতার মধ্যে থেকেও আমি এই শূন্যতাকে খুজতে ভালোবাসি।
তাই হয়ত এই মিশ্র অনুভুতির শূন্যতাকে খুজতেই অসময়ে নিজের শহরে চলে আসি।

বৃহস্পতিবার, ৭ জানুয়ারী, ২০১৬

জীবনের স্টপেজ

ব্যস্ততার সাথে মানুষ দৌড়াতে দৌড়াতে একটা সময় এমন একটা স্টপেজ আসে যেখানে থমকে দাড়াতে হয় কিছু সময়ের জন্য।সেখানে দাড়িয়ে ক্ষনিকের জন্য কত পুরনো স্মৃতিগুলো রোমন্থন করতে চায়।কতই অদ্ভুত লাগে ভাবতে পুরনো সময়গুলো।যখন স্টপেজের স্থায়ীত্ব বিলুপ্ত হয়ে যায় ঘোর কেটে যায়।তখন সিগারেটের ধোয়া উড়িয়ে স্বান্তনা দিতে হয় নিজেকে।

ব্যস্ত শহরের বুকে সময় নেই কারো দিকে কারো তাকানোর।শহরের উচু উচু এপার্টমেন্টের ছোট ছোট রুমগুলোতে চলতে থাকে নিউটনের বিশাল বিশাল সূত্রের প্রতিপাদনের খেলা,বিশাল বিশাল ইন্ড্রাস্টির লভ্যাংশ অর্জনের প্রচেষ্টা।কেউ কেউ লিরিক্সের মাদকতায় গিটারের ছয় তারের সুরে ঝঙ্কার তোলে।কেউ বা মেকি ভালবাসার বলি হয়ে বালিশ ভিজিয়ে জীবনের ফুল স্টপ বসানোর চিন্তা করে।কেউ বা ফিফা গেমসে কিভাবে খেলোয়াড়ের দক্ষতা বাড়ানো যায় সেই চিন্তায় বিভোর হয়ে যায়।
জানি না এই শহরের বুকে কে ভাবে তার ব্যক্তিগত অনুভুতিগুলোকে  তার নিজের স্বত্তার রঙে রাঙিয়ে দেওয়া নিয়ে?

ব্যস্ততার এতই ক্ষমতা যে আজ কারও কারও জীবন থেকে সে সকাল,বিকাল কিংবা রাত যেকোন একটা সময় মুছে দিয়েছে।আসলে সময়ের সাথে মানুষগুলোয় না কেমন যেন ব্যস্ততার হাতের পুতুল হয়ে গেছে।সবাই পুরনো স্মৃতিগুলো হাতড়ানোর জন্য সেই থমকে যাওয়া স্টপেজের জন্য অপেক্ষায় থাকে।সময় ফুড়িয়ে যাচ্ছে।বেনসনের প্যাকেটের নিষ্পাপ সিগারেটগুলো ক্রমাগত অগ্নি স্ফুলিঙ্গ করে নিজের ক্রোধগুলো প্রকাশ করছে।সিগারেটের ক্রোধগুলোতে ব্যক্তিস্বত্তা আজ নিজের ক্রোধের বহিঃপ্রকাশ করছে।একটা সময় সিগারেট ফুড়িয়ে যায়।আর স্মৃতিগুলো সেই স্টপেজে যাওয়ার অপেক্ষায় দিন গুনতে থাকে।হয়ত নিয়তি ভালো থাকলে স্টপেজে যাওয়ার সুযোগ মেলে আর নয়ত সেই স্টপেজের ফুলস্টপে নিজের ইতি টানতে হয় স্মৃতিগুলোকে।

সোমবার, ৩১ আগস্ট, ২০১৫

অতৃপ্ত শুন্যতা


জীবনটা ধীরে ধীরে ফিনিক্স পাখির মত ডানা মেলতে শুরু করছে।ফিনিক্স পাখি যেমন একসময় পুড়ে ছাই হয়ে যায় এবং সেই ছাই থেকে আরেকটি নতুন পাখির জন্ম হয় ঠিক জীবনটাও তেমনই ক্রমাগত শুরু হয়ে আবার শেষ হয়ে যাচ্ছে।
এই জীবনের কোন পূর্ণতা নেই।পূর্ণতাগুলো অতৃপ্তই থেকেই যায়।হয়তবা পূর্ণতা হওয়ার প্রয়োজন নেই।
কিন্তু জীবন থেমে থাকে না। 
দিন শেষে যখন ঘরে ফেরা পাখিদের দেখা যায় তখন খুব আফসোস বোধ সৃষ্টি হয়।কেননা ঘরে থেকেও মানুষ নিজেকে বিশাল শুন্যতায় আবিষ্কার করছে।ওদের মত ঘরে ফেরার আনন্দ উপভোগ করার ইচ্ছার অভাবটা প্রবল ভাবে অনুভূত হয়।কিন্তু ওই যে,অপূর্ণতা থেকেই যায়। 
অপূর্ণতা ধীরে ধীরে গ্রাস করে নিচ্ছে। 
প্রতিবার যখন মানবস্বত্বার শুরু হয় তখন মনে হয় এবার যখন শেষ হব তখন এই অপূর্ণতাগুলো আর থাকবেনা।কিন্তু তা আর হয় না। 
হয়তবা আশা করা মানুষের সহজাত প্রবৃতি।তাই হয়তবা আশা করে মানুষ। 
দিন শেষে রাত নামে।ধীরে ধীরে ব্যস্ততার সমাপ্তি ঘটতে থাকে।আরেকটি পূর্ণতাময় দিনের সুচনার আশা করতে থাকি। 
রাত বাড়তে থাকে মনের বাসনাগুলো জীবন্ত হতে থাকে।রাত শেষে যখন পূর্ব দিগন্তে ভোরের রেখা দেখা যায় তখন সেই বাসনাগুলোকে হয়তবা দুঃস্বপ্ন বলে উড়িয়ে দেই।রাতের সেই বাসনাগুলোর স্থানে একরাশ শুন্যতা স্থান নেয়। 
এভাবেই চলতেছে জীবন। 
প্রতিবার অতৃপ্ত হয়ে শেষ হয়ে যাওয়া আবার একবুক আশা নিয়ে শুরু হওয়া 
কিন্তু মুদ্রার ওপিঠে সেই অতৃপ্ততা। 
ক্রমাগত নিষ্পেষিত হচ্ছি এই অতৃপ্ত শুন্যতায়।